নিজের সীমাহীন দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে প্রধান শিক্ষকের পকেট ম্যানেজিং কমিটি গঠন ।

জেলা প্রতিনিধি – জামালপুর।

জামালপুরে মেলান্দহ উপজেলাধীন আদ্রা আব্দুল মান্নান উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক খন্দকার গোলাম মোস্তফা তোতা কর্তৃক বিদ্যালয়ের অর্থ হরিলুট, কোচিং বাণিজ্য, সরকারি পরিপত্রের অমান্য করে শিক্ষার্থীর কাছ থেকে অধিক অর্থ আদায়,বিদ্যালয় পরিচালনায় অনিয়ম এবং ম্যানেজিং কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী আব্দুল মান্নান উচ্চ বিদ্যালয়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক খন্দকার গোলাম মোস্তফা তোতা বির্তকিত নানা সিদ্ধান্তের কারণে স্কুলটিতে এখন অনিয়ম আর দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। অনিয়ম আর দুর্নীতির কারণে ঐতিহ্যবাহী এ স্কুলটির সুনাম নষ্ট হতে বসেছে।

নির্বাচনের তফসিল গোপন করে নিজের সহধর ভাই সরকারি কর্মকর্তা ( নায়েব) খন্দকার মুসা অভিভাবক সদস্য মনোনীত করা, গোপনে দাতা সদস্য জিয়াউল হক মুক্তা এবং নিজের পছন্দের শিক্ষকদের দিয়ে কমিটি গঠন করেন । নির্বাচন আয়োজনের জন্য বিদ্যালয়ের ভোটারদের সরকারি তালিকার পাশাপাশি আরো একটি ভুয়া তালিকা করেছেন বলেও অভিভাবকরা অভিযোগ করেছেন। অভিভাবক সদস্যদের মধ্যে আদ্রা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবু হানিফ জানান,আমি অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র অভিভাবক হিসেবে প্রধান শিক্ষকের কাছে মনোনয়ন ফরম নিতে চাইলে আমাকে অস্বীকৃতি জানান এবং আমার সাথে অসৌজন্যমূলক আচরন করেন। বাধ্য হয়ে আমি মাননীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মির্জা আজম এম.পি (জামালপুর-৩) কে বিষয়টি অবহিত করি এবং লিখিত অভিযোগ করি যাতে সরকারি পরিপত্র অনুসরন করে পুনরায় অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন করা হয়।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আদ্রা আদ্রা আব্দুল মান্নান উচ্চ বিদ্যালয়টি মেলান্দহ উপজেলায় একটি নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পুজি করে তোতার লালিত’ ম্যানেজিং কমিটির সহযোগীতায় প্রধান শিক্ষক নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ৫/৬পদটি শুণ্য থাকায় প্রধান শিক্ষকের ঘনিষ্ঠজনদের দিয়ে শুণ্য পদটি পুরন করার চেষ্টায় মগ্ন হয়েছেন।

শুধু তাই নয়, তার মতের বিরুদ্ধতা কারী শিক্ষকদের ব্যাপক মানসিক নির্যাতন করা হয়।
গোপনে অনলাইনে প্রেরিত কমিটির সভাপতি জিয়াউল হক মুক্তা,সদস্য সচিব খন্দকার গোলাম মোস্তফা তোতা ( প্রধান শিক্ষক) প্রধান শিক্ষকের ছোটভাই সদস্য খন্দকার মুসা নায়েব,সদস্য ভাইয়ের শশুর (তাওই) ডাঃ খলিলুর রহমান,সদস্য (চাচাতো ভাই) খন্দকার আমিনুর ইসলাম, মহিলা সংরক্ষিত সদস্য ( সম্পর্কে ভাই বৌ) শিখা, শিক্ষক প্রতিনিধি প্রিয়পাত্র জেসমিন,বাইরে থেকে আসা (প্রবাসি) সদস্য -লান্জু প্রমুখ।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম এলাহি আকন্দ জানান- আমি কমিটির গঠন ও সার্বিক বিষয়ে কিছু জানি না। একাডেমী সুপার ভাইজার আশরাফুল সাহেব জানে। তবে কমিটি অনুমোদন হওয়ায় আগ পর্যন্ত আমি অনেক বার প্রধান শিক্ষক তোতা সাহেব কে দেখা করতে বলেছিলাম। তিনি দেখা না করে ফোনে কথা বলতে চায়। আজ কমিটি অনুমোদনের কপি ও সভাপতিকে সাথে নিয়ে আমার কাছে এসেছে। আমার সামনে বসে থাকা অবস্থায় মাননীয় সাংসদ আলহাজ মির্জা আজম এমপি তিনাকে না জানিয়ে গোপনে ও দূর্নীতির আশ্রয়ে কমিটি করার কারণে সাসপেনশন পাঠানোর কথা বলে এবং প্রধান শিক্ষক খন্দকার গোলাম মোস্তফা তোতা মির্জা আজম মহোদয়ের উত্তরে বলেন – আমার চাকুরি আছে আর মাত্র ৪ মাস কিভাবে চাকুরি খাবেন? এই কথাগুলো আমি পাশে থেকে শুনেছি।
বিদ্যালয়ের অনিয়ম, দুর্নীতি ও গোপনে কমিটি গঠন করার অভিযোগ আমি শুনেছি,তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নিবো এবং উর্ধ্বতন কর্মকর্তা কমিটি বাতিল করতে পারবে। কমিটি গঠন
সরকারি পরিপত্র মোতাবেক না হওয়ায় ইতিমধ্যে একাধিক অভিভাবক মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান,মাননীয় সংসদ সদস্য মির্জা আজম এমপি,প্রেসক্লাব,ডিসি,ইউএনও বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছে।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক নিজের সকল দুর্নীতিকে ধামাচাপা দিতেই এ কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়েছেন বলে স্থানীয়রা মনে করছেন । যার কারণে শিক্ষকদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে মনোমালিন্য ও দ্বন্ধ। যার প্রভাব পড়েছে পাঠদানেও । এরই ফলে বিগত তিন বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে চরম বিপর্যয় ঘটেছে ।

তিনি আরো জানান, আসন্ন ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনেও প্রধান শিক্ষক স্বজনপ্রীতি আর অনিয়মের মাধ্যমে দূর্নীতির রামরাজত্ব অব্যাহত রাখার জন্য তথাকথিত ব্যক্তিদের দিয়ে পরিকল্পিত ও সাজানো কমিটি গঠনের ছক চূড়ান্ত করেছেন। অতীতে কোন কমিটি এভাবে হয়নি। মনে হয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করে অনিয়মকে ঢাকার চেষ্টা হিসেবে এভাবে কমিটি করা হচ্ছে। এলাকাবাসীর উচিত বিদ্যালয়ে অনিয়মের ডালপালা আরো ছড়িয়ে পড়ার আগেই সমস্যা নিরসনে সোচ্চার হওয়া। প্রধান শিক্ষক খন্দকার গোলাম মোস্তফা তোতার দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ না হলে শুধু ভবন ও মাঠ পড়ে থাকবে শিক্ষার্থী থাকবেনা। বিষয়টি নিয়ে এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যকর ও থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে অত্র বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য নেওয়ার জন্য মুডোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *