সারাদেশের ন্যায় খুলনাতেও রওশনপন্থী জাতীয় পার্টিকে সুসংগঠিত হতে বলেছে রওশন এরশাদ!!

বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো চীফ :

বর্তমান জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদের ডাকা ২৬ নভেম্বর কাউন্সিলর সফল করার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের কয়েকজন তৎপর হয়েছে। তারা দলীয় কর্মীদের কে গঠনতন্ত্রের ২০ এর ১ ধারা অনুযায়ী প্রধান পৃষ্ঠপোষক এর দায়িত্ব ও ক্ষমতা সম্পর্কে কর্মীদের অবগত করেছে।
এই অংশ খুলনার সংগঠনের তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পাল্টা কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।
তবে জাতীয় পার্টির মূল সংগঠক
সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের হাতে গড়া দল জাতীয় পার্টির অনেক ত্যাগী নেতারা খুলনায় এই রওশনপন্থী সংগঠনের বিপক্ষে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলেও সূত্র থেকে জানা যায়।

খুলনার এরশাদপন্থী নেতারা বলেন।
এক সময় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে থাকলেও। পর্যাক্রমে এরশাদ এর কিছু অপকর্মের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনায় রাষ্ট্রনায়ক থেকে স্বৈরশাসন হিসেবে পরিচিত হয় বাংলার জনগনের কাছে।

তারপর ৯০ দশকে এরশাদ বিরোধী গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরশাসন উৎখাতের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলি একত্রিতভাবে রাজপথ উত্তপ্ত করে এরশাদের পতন আন্দোলন গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করেছিল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সকল রাজনৈতিক দল সহ সাধারন জনগন।

সেই ক্ষেত্রে সকল আন্দোলনের তোপের মুখে পড়ে দিশেহারা হয়ে রাষ্ট্রপতি এরশাদ কে রাত্রের অন্ধকারে ক্ষমতা ছাড়তে হয়।

অথচ তারই হাতে গড়া সেনাবাহিনী কর্তৃক গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করতে হয় একটানা দীর্ঘদিন।
সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জাতীয় পার্টি একেবারে নিশ্চিহ্ন নিষ্পেষিত হয়ে দেশের প্রেক্ষাপট থেকে উৎখাত হয়ে যাওয়ার পূর্ব মুহুর্তে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে কারামুক্ত করে।

এবং তখন পুনরায় জাতীয় পার্টিকে চাঙ্গা করে রাষ্ট্রীয়ভাবে নির্বাচন করার অংশগ্রহণ করার সুযোগ করে দিয়ে কিছু সংখ্যক আসনে নির্বাচিত করে জাতীয় সংসদের ঢোকার সুযোগ করে দিয়েছিল এরশাদকে।

তখনো হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান পদে বহাল তবিয়তে ছিলেন।

অতঃপর এরশাদের সঙ্গে হোসাইন মোহাম্মদ এরশাদের প্রথম স্ত্রী রওশন এরশাদের বনিবনা না হওয়ার কারণে জাতীয় পার্টি থেকে রওশান এরশাদ বেরিয়ে এসে রওশনপন্থী জাতীয় পার্টি সংগঠন তৈরি করে এরশাদের বিপক্ষে রাজনীতি শুরু করেন এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদ।

দীর্ঘদিন এভাবে দুজনের ভিতরে রেষারেষি রাজনীতি চলতে থাকলেও তার কিছুদিন পরে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর মাধ্যমে সমঝোতার মধ্য দিয়ে জাতীয় পার্টিকে আবার সুসংগঠিত করে গড়ে তোলেন তিনি।

পরবর্তীতে জাতীয়পার্টির আভ্যন্তরীন কোন্দলের কারণে একই জাতীয় পার্টির তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়।

তার মধ্য আবারো রওশনপন্থী জাতীয় পার্টি মজবুত ভীত তৈরি করার মধ্য দিয়ে সুসংগঠিত হয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের বিরোধী দল হিসেবে নির্বাচন করেন রওশন এরশাদ।

তবে রাষ্ট্রপতি এরশাদ মৃত্যুবরণ করার পরে মানসিক দিক থেকে রওশান এরশাদ কিছুটা ভেঙে পড়লেও অতঃপর সে রাজনীতির কোন প্রেক্ষাপটে অংশগ্রহণ করতে পিছিয়ে থাকে নি।

এবং বর্তমানেও রওশন এরশাদ বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল হিসেবে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় অবস্থান দখল করে আছেন।
এবং বেগম রওশন এরশাদ বেশ কিছুদিন শারীরিকভাবে চরম অসুস্থ থাকার কারণে ব্যাংককে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে এসে।
রওশন এরশাদ স্থানীয় পর্যায়ে যে সকল নেতারা দলছুট হিসেবে এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করছে তাদের সুসংগঠিত করার জন্য স্থানীয় পর্যায়ের সকল নেতাদের আহ্বান জানান।

গত বুধবার রওশন পন্থীরা খুলনায় মোটরসাইকেলযোগে দলীয় কার্যালয়ে সামনে রওশন পন্হীদের সমাবেশ বিরোধী স্লোগান দিলে দলের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফফার বিশ্বাসের অনুরোধে তাদের এ অভিযান স্থগিত হয়।

রওশন এরশাদ তার সমর্থকরা বলছেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির আন্দোলনে তারা সম্পৃক্ত হতে চান না। এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন আন্দোলনও নির্বাচন করতে তাদের ঘোর আপত্তি।

জাপার কেন্দ্রীয় সদস্য রওশন এরশাদ সমর্থক বলে পরিচিত এডভোকেট এস এম মাসুদুর রহমান বলেছেন দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা ২৬ নভেম্বর কাউন্সিলকে সমর্থন দিচ্ছে।

এরশাদের আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত দায়িত্বশীল পদে আনা হবে।
তিনি বলেন চেষ্টা চলছে মহানগর শাখার সভাপতি হিসেবে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফফার বিশ্বাসকে সভাপতি ও মোল্লা শওকত হোসেন বাবুলকে সাধারণ সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য একেএম মুক্তার হোসেন অথবা পাইকগাছার মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীরকে সভাপতি অ্যাডভোকেট এস এম মাসুদুর রহমান সাধারণ সম্পাদক ও জেলা কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

অপরদিকে নগর জাতীয় পার্টির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোঃ মাহাতাব উদ্দিন এ প্রতিবেদককে জানান তিনি দলের চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের প্রতি আস্থাশীল। তিনি তথ্য দিয়েছেন খুলনা নগরীর সকল থানা শাখা রওশান এরশাদ এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তিনি প্রশাসনিক ট্রাইবুনাল ও জাতীয় আইনজীবী ফেডারেশন খুলনা সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
সেক্ষেত্রে খুলনা জেলার সকল রওশনপন্থী রাজনৈতিক নেতারা সুসংগঠিতভাবে রওশন এরশাদের গতানুগতিক রাজনীতি ধারাকে অব্যাহত রেখে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় এবং কাউন্সিলর সম্মেলন ও সফল করার পক্ষে।

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির সকল জেলা পর্যায়ে এবং থানা পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতাদের সুসংগঠিত হওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেছেন।
আমরা দেশের ৩০০ আসনেই রওশনপন্থী জাতীয় পার্টির প্রার্থী দেওয়ার মাধ্যমে নির্বাচন করব।
তার জন্য সকল জেলা কমিটিকে দলীয়ভাবে সুসংগঠিত হয়ে সকল নেতাকর্মীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য প্রস্তুুত থাকতে বলেছে রওশন এরশাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *