কাজ নাই, শুরু হইছে নদীভাঙন, হামার কী হইবে।

ইয়াছিন আলী ইমন
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডপ গ্রামে অব্যাহত ধরলা নদীর ভাঙন ঠেকাতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। রোববার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এক ঘণ্টাব্যাপী এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন ভাঙনকবলিত মানুষ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হাসেন আলী, স্থানীয় আব্দুস সালাম, আব্দুল মালেক, ফরহাদ আলী, নাজিমুদ্দিন সিদ্দিক আলী প্রমুখ।মানববন্ধনে চেয়ারম্যান মো. হাসেন আলী বলেন, আমার ইউনিয়নের গোরকমন্ডপ গ্রামটি ২ মাস ধরে ধরলা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগ করেও কোনো সুরাহা পাচ্ছি না। এত বড় গ্রামের জন্য মাত্র ২০০টি জিও ব্যাগ দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড নীরব ভূমিকা পালন করছে। গোরকমন্ডপ গ্রামটি রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে কয়েক দিনের ভাঙনে এই গ্রামটি মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, স্থানীয় প্রশাসনও বিষয়টিতে গুরুত্ব দিচ্ছে না। তাই ফুলবাড়ী থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে এসে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করতে হচ্ছে। স্থানীয় ফরহাদ আলী বলেন, ধরলার টানা ভাঙনে চরগোরকমন্ডপের প্রায় এক হাজার একর ফসলি জমি, মাছের ঘের, ৬ শতাধিক ঘরবাড়িসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান বিলীন হয়েছে। এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডে বার বার জানিয়েও কোনো উদ্যোগ নেয়নি। গত এক মাসে প্রায় শতাধিক বাড়ি-ঘর ধরলা নদীতে বিলীন হয়েছে। সঙ্গে শত শত বিঘা আবাদি জমিও চলে গেছে নদীতে।মানববন্ধনে ভিটেমাটি হারা আব্দুস সাত্তার বলেন, গত কয়েক দিনে আমার এক বিঘা জমি ধরলা নদীতে চলে গেছে। ঘর-বাড়ি রক্ষা করতে পারি নাই। এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি। আমার মতো এ রকম হাজারো পরিবার তাদের ফসলি জমি ও ঘর-বাড়ি নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে। ওই এলাকার নাজিমুদ্দিন বলেন, এমনিতে হামার এডাই (আমার এখানে) কাজ নাই। তার মধ্যে নদী ভাঙি (ভেঙে) শ্যাষ (শেষ)। যেটুকু আছে কাজ না করলে তাহো নদীর পেটোত (পেটে) যাইবে। ফকির হইয়া যামো (যাবো) হামরা সবাই।কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, গোরকমন্ডপ তো চর এলাকা। ওখানে আমাদের কোনো বাঁধ নেই। এখন পর্যন্ত আমরা কোনো ব্যবস্থা নেই নাই। আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *