মোঃ রমজান আলীঃ ঝিনাইদহ
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে নিয়োগপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসারের অনুপস্থিতিতে ওএমএস”র চাল বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি নীতিমালা ভঙ্গ করে ও এম এস ডিলারগণ এই চাল বিক্রয়ের কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কোটচাঁদপুর পৌর এলাকার চারটি স্পটে ৪ জন ডিলারের মাধ্যমে খোলা বাজারে ওএমএস’র চাল-বিক্রি শুরু হয়েছে।
প্রতি ডিলারকে প্রতিদিন দুই হাজার কেজি চাল বরাদ্দ দিয়ে জনপ্রতি ৫ কেজি বিক্রির শর্তে চাল ৩০ টাকা দরে এবং প্রতিজন ক্রেতাকে স্বাক্ষর বা টিপসই নেয়ার নির্দেশনা রয়েছে।
JasTv.News এর অনুসন্ধানি টিম সরেজমিনে চৌগাছা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থিত ওএমএস ডিলার মোঃ মোজাম্মেল হক এর বিক্রয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, লাইন ধরে চাল ক্রয় করছেন ক্রেতারা।এরই ভিতরে ডিলার নিজে এক ক্রেতাকে দিয়ে অধিক স্থানে টিপসই করিয়ে নিচ্ছেন।
জনমনে প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি কালো বাজারে বরাদ্দকৃত চাল বিক্রির মাষ্টার রুলের খাতা সঠিক করছে?সাংবাদিকেরা এমনও প্রশ্ন করলে ডিলার মোজাম্মেল হক বলেন,পরিচিত অনেক এলাকাবাসীর থাকে যাদেরকে ৫ কেজির পরিবর্তে ১০/১৫ কেজি দেওয়া লাগে। এইটা কিছু মনে করবেন না।
এদিকে সাংবাদিকরা সরেজমিনে ঘুরে পৌর শহরের দুধসরা রোডে অবস্থিত ডিলার আশাদুল ইসলাম এর বিক্রয় কেন্দ্রে ট্যাগ অফিসার পাওয়া যায়, আর অন্য সব বিক্রয় কেন্দ্রে কোন ট্যাগ অফিসার পাওয়া যাই নাই। মুঠোফোনে কথা হলেই বলেই এইমাত্র ওখান থেকে আসলাম আবার এক্ষুণি যাবো। অপেক্ষার প্রহর শেষ হয় তবুও দেখা মেলে না।
অন্যদিকে বাকি ডিলার কেন্দ্রে সকাল ১১-১২ টা না বাজতেই চাল বিক্রি কার্যক্রম শেষ করেন। যেখানে প্রতি একজন ক্রেতার চাহিদা মোতাবেক চাল দিতে এক মিনিট সময় ধরলেও সর্বনিম্ম ৬/৭ ঘন্টা সময় লাগে, অথচ সেখানে ২ /৩ ঘন্টার ভিতরে ডিলার তার নির্ধারিত স্টক শেষ করে দিচ্ছে।
উল্লেখ থাকে , একজন ডিলার তার নির্ধারিত মাল বিক্রি শেষ করে তারপর ডিও করতে পারবেন,কিন্তু এই নিয়মটাও সঠিক ভাবে মানা হচ্ছে না। উপজেলা খাদ্য অফিস ডিলারের মাল বিক্রি শেষ হওয়ার আগেই ডিও দিয়ে দিচ্ছেন। আর এই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে ডিলাররা দূর্ণীতি করছে এবং কালো বাজারে অবৈধ ভাবে চাল বিক্রি করে দিচ্ছেন।
এলাকাবাসী জোর দাবি জানায়, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও সরকারি গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দুজনাই যদি তাদের চাকরি স্থলে নিয়মিত থেকে তদারকি করে তাহলে সরকারের বরাদ্দকৃত চাল সাধারণ মানুষের মাঝে সঠিকভাবে বন্টন হবে।
এব্যাপারে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এর কার্যালয়ে একাধিক যাওয়ার পরেও তাকে তার কর্মস্থলে পাওয়া যাইনি।
এদিকে উপজেলা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওয়াহেজুর রহমান খান জানান, যদি কোন ও এম এস ডিলার নিয়ম ভঙ্গ করে কালো বাজারে অবৈধ ভাবে চাল বিক্রয়ের অভিযোগ পাই, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে তার ডিলারশিপ বাতিল ঘোষণা করব। এবং তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এমন বক্তব্যে থাকলেও সরেজমিনে নেই কোন আইনের প্রয়োগ। দেদারসে ডিলাররা চালিয়ে যাচ্ছে দুর্নীতি, জনমনে প্রশ্ন উঠে আসে দেশের আইন রক্ষক কি তাহলে নিরব ভূমিকা পালন করছে।