বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যুরো চীফ:
খুলনায় বহুল আলোচিত মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ি রহস্যজনক নিখোঁজ রহিমা বেগমের কথিত অপহরণের মামলায় কারাগারে আটক ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি এবং নিখোঁজের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী মরিয়ম মান্নান আদরি আক্তার মিরাজ হোসেন ছাদি ষড়যন্ত্রকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এলাকার রাজনীতিবিদ সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষের। আজ ২৯ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় খুলনা-যশোর মহাসড়কের ফুলবাড়ি গেট বাস স্ট্যান্ড চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে বক্তারা প্রশাসনের কাছে এ দাবি জানান।
মোঃ আল আমিন হাওলাদারের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন কেসিসি ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ সাইফুল ইসলাম ফুলবাড়ী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মনিরুল ইসলাম। খানাবাড়ি যুব সংঘ ক্লাবের সভাপতি আবু হেনা বাবলু সাধারণ সম্পাদক তৈয়বুর রহমান লিটন মহানগর বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিজান এনামুল হাসান ডায়মন্ড ইউপি সদস্য মোল্লা সোহরাব হোসেন বিল্লাল হোসেন আটককৃত মহিউদ্দিনের কন্যা মালিহা মহিউদ্দিন মাহী হেলাল শরিফের কন্যা অন্তরা ফাহমিদা পলাশের স্ত্রী মরিয়ম হাসান মোঃ মিজানুর রহমান ও হুমায়ুন কোবির আম জিয়াউর রহমান সেকেন্দার মন্ডল মশিউর রহমান মেজবাউল হক মেজবাহ সোহান রাজু সরদার মেহেদী হাসান সোহেলসহ মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ি এলাকার বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মানববন্ধনে পরিকল্পনাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আটককৃতদের দ্রুত মুক্তির দাবি সংবলিত ব্যানার প্লাকাট অফিস ট্যুর নিয়ে এলাকার সকল দলমত নারী-পুরুষ শিশু-কিশোর আবালবৃদ্ধ সামাজিক-রাজনৈতিক সুশীলসমাজ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সর্বস্তরের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন রহিমা বেগম নিখোঁজের ঘটনা তার মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ পরিবারের সদস্যরা কিভাবে পরিকল্পনা করে প্রতিপক্ষ কে ফাঁসিয়ে দিয়েছে তা ইতিমধ্যে দেশের মিডিয়া গুলোর মাধ্যমে দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী দেখেছে। রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নানসহ স্বজনরা পরিকল্পিত ঘটনা সৃষ্টি করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপর এর দায় চাপিয়ে হুংকার দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন সংস্থাকে মরিয়ম মান্নান গং বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে ফায়দা লুটতে চেয়েছিল। বক্তারা বলেন তথাকথিত নিখোঁজের নাটক সাজিয়ে তারা দেশের এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। যে মুহুর্তে মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে গুম-অপহরণ নিয়ে বিশ্ব মোড়লরা দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দিকে আঙ্গুল তুলেছে ঠিক সেই মুহূর্তে এ ধরনের একটি ঘটনার সৃষ্টি করে নতুন করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার গভীর ষড়যন্ত্রের অংশক কিনা তা খতিয়ে দেখার আহ্বান জানান। আটককৃতদের পরিবারের স্বজনরা তাদের বক্তৃতায় বলেন মানুষের ইমোশন নিয়ে যারা খেলা করছে ১৭ কোটি মানুষের আবেগ নিয়ে যারা খেলে তাদের বিচার না হলে এমন অনেক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। মানববন্ধনে বক্তারা বহুল আলোচিত রহিমা বেগম নিখোঁজের ঘটনার সাথে জড়িত পরিকল্পনাকারী মরিয়ম মান্নান আদরি আক্তার মিরাজ হোসেন ছাদি সহ ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেফতারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং কথিত অপহরণ মামলায় একমাস যাবত কারাগারের থাকা নির্দোষ মহিউদ্দিন গোলাম কিবরিয়া জুয়েল পলাশ ও হেলাল শরীফের দ্রুত নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন। মানববন্ধন থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আটককৃতদের মুক্তি না দিলে একই দাবিতে খুলনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য মহেশ্বরপাশা খানাবাড়ি গ্রাম থেকে গত ২৭ আগস্ট রাতে রহিমা বেগম নিখোঁজ হলে তার মেয়ে আদরি আক্তার বাদী হয়ে ২৮ আগস্ট দোলতপুর থানা অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করে। ইতিমধ্য রহিমা বেগম কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী গত ২৪ সেপ্টেম্বর জীবিত ও অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে কিন্তু জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের ওই মামলায় প্রতিবেশী হেলাল শরিফকে গত ৩০ আগস্ট প্রতিবেশী কুয়েটের সহকারি প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ গোলাম কিবরিয়া ব্যবসায়ী মহিউদ্দিন ব্যবসায়ী জুয়েল ও সরকারি চাকরিজীবী রফিকুল ইসলাম পলাশ কে পুলিশ ডেকে নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর এবং সর্বশেষ নিখোঁজ রহিমা বেগমের স্বামী বিল্লাল হাওলাদার ওরফে বেল্লাল ঘটককে ১২ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারকৃত রহিমা বেগমের স্বামীর সহ মোট ছয়জন এখন পর্যন্ত কারাগারে রয়েছে।