নগরকান্দায় বিষপানে মায়ের মৃত্যু, স্বজনদের অভিযোগ হত্যার

মিজানুর রহমান
নগরকান্দা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি :

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার লস্কারদিয়া ইউনিয়নের বারখাদিয়া গ্রামে বিষপান করে নুরজাহান বেগম(৫০) নামে এক নারী’র মৃত্যু নিয়ে স্বজনরা হত্যার দাবি জানান।
৭ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজ ঘরের কক্ষে বিষপান করলে তাকে প্রথমে স্থানীয় তালমা বাজার এক পল্লী চিকিৎসক এর নিকট নিলে সেখানে চিকিৎসককে না পাওয়ায় নুরজাহান বেগম কে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে য়ায় ছেলে সহ তার স্বজনরা।হাসপাতালে কর্তব্যরতরা ওয়াশ প্রক্রিয়ায় তার পেট থেকে বিষ বের করে দিলে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে। ৪ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার মারা যায়। নিহতের বড় মেয়ে শাহিনুর বলেন,আমরা দুই বোন এক ভাই, আমাদের দুই বোন এর বিয়ে হয়ে গেছে,বাবা শেখ নান্নু মারা গেছে কেন্সারে দুই বছর আগে,বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে আমার মা নুরজাহান বেগম একই ঘরের সাথে আলাদা রুমে থাকতো এবং ভাই ভাবির অত্যাচার নির্যাতনের কারনে সে আলাদা থাকতো- খাইতো,ভাই হান্নান কোনদিন আমার বাবাকে চিকিৎসা করাইনি মা’কেও কোনদিন একমুঠ ভাত দেয়নি,আমরা বোনরা তাকে কতোবার বলছি মা তুমি আমাগো বাড়ি থাকবা চলে আস আমরা তোমার সেবা যত্ন করবো, তবুও আমার মা আমাগো কথা শুনেনি,নিজের স্বামী’র ভিটায় থাকছে আর আমার ভাই হান্নান এর ছেলে – মেয়ে লালন পালন করছেন। এছাড়া ঘটনার দিন মায়ের বিষ খাওয়ার কথা আমাদের কাউকে জানাই নি।অন্য মরফত মা’য়ের এমন অবস্থা জানতে পারি এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যাই সেখানে ভর্তি করি।হান্নান এর বড় বোন শাহিনুর আরও বলেন মৃত্যুর আগে আমার মা জবানবন্দি দিয়ে গেছে যে তার মৃত্যুর জন্য তার ছেলে হান্নান ও হান্নান এর স্ত্রী সালমা বেগমই দায়ী তোরা হান্নান কে ছাড়িস না। মা’য়ের মৃত্যু নিশ্চিত জেনে ছেলে হান্নান ও তার স্ত্রী সালমা বেগম মৃত্যুর দুইদিন আগেই বাড়িতে ঘরের মধ্যে থাকা জিনিসপত্র, কাপড়চোপড়, ছাগল নিয়ে রাতের আধারে পালিয়ে যায়। হাসপাতালে মায়ের পাশেও ছিলোনা হান্নান। হাসপাতাল থেকে নুরজাহান বেগম এর মৃত্যু খবর ফরিদপুর সদর কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানতে পারে এবং লাশের সুরতহাল রিপোর্ট শেষে পোস্টমর্টেম করার জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে নিহতের স্বজনরা জানান। পোস্টমর্টেম শেষে লাশ রবিবার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পুর্ন করবে বলেও তারা জানান। মায়ের মৃত্যু নিশ্চিত জেনে একমাত্র ছেলে হান্নান শেখ ও হান্নানের স্ত্রী সালমা সন্তানদের নিয়ে পালিয়ে থাকায় গর্ভধারিনী মায়ের লাশের কবরে মাটি দিতে পারেনি, মায়ের মুখ শেষবারের মতো দেখার সৌভাগ্য হয়নি একমাত্র ছেলের।আশপাশের লোকজন ও স্বজনরা অনেকেই বলেন মায়ের প্রতি অত্যাচার অবিচার, নির্যাতন ছেলে করায় আজ তার মায়ের মৃত্যু হয়েছে সবাই তার শাস্তি কামনা করেন।
মোবাইলে হান্নান শেখ এর সাথে কথা হলে তিনি জানান আমার সাথে মায়ের জগড়া হয়েছে কিন্তু বিষ আমার ঘরে ছিলো না বিষ কোথা থেকে পেল এবিষয় আমি কিছু জানিনা। তবে দশ- পনের আগেও আমার ছেলেকে বিষ খাইয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করে তখন প্রতিবেশীর দোখার কারনে ছেলে বেচে যায়।এছাড়া হান্নান আরও বলেন বাড়ির পাশে মামা খালেক ও মালেক মাতুব্বর তার ছেলে সহ আমাকে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার হুমকি ও মারপিট করার ভয় দেখায়।বিষ কোথা থেকে পেল কিভাবে বিষ খেয়েছে তার কিছুই জানেন না বলে হান্নান শেখ বলেন।এবিষয় নগরকান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মিরাজ হোসেন বলেন শুনেছি বিষ খেয়ে একজনের মৃত্যু হয়েছে তবে কেউই এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করেনি অভিযোগ করলে আমরা তখন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তবে নিহতের বড় মেয়ে শাহিনুর বলেন মামা’রা আছেন তারা আসলে তাদের নিয়ে থানায় ভাই,ভাবির নামে অভিযোগ করবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *