সড়কের বেহাল দশা; চরম ভোগান্তিতে জনগণ!

মোঃ আশরাফুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ.

মানিকগঞ্জের পৌর এলাকার বেউথা-আন্ধারমানিক সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভেঙে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়াতে এক দিকে যেমন চলাচলে চরম কষ্ট হচ্ছে অন্য দিকে সৃষ্টি হচ্ছে প্রচুর ধুলোবালি। এতে প্রতিদিনই ভোগান্তিতে পড়ছেন সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লক্ষাধিক মানুষ।

পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার অধীনে না থাকা সত্ত্বেও মানুষের ভোগান্তি বিবেচনা করে এই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক সংস্কারের জন্য ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় পৌর কর্তৃপক্ষ। সঠিকভাবে কাজ না হওয়ায় সড়কের আবারও খানা-খন্দে পরিণত হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ব্যস্ততম এই সড়কে অতিরিক্ত যানবাহন চলাচল করায় প্রতিনিয়ত ধুলো-বালি উড়ে। এতে সড়কের দুপাশে বাড়িঘর ও গাছপালায় ধুলার আবরণ জমে থাকে। পথচারী মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসে ধুলো বালি গিয়ে স্বাস্থ্যের মারাত্মক ক্ষতিসাধন হচ্ছে।

মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা, হরিরামপুর, ঘিওর, শিবালয়, দৌলতপুরসহ প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষের চলাচল এই সড়ক দিয়ে। সড়কের দূরত্ব কম হওয়ায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে যানবাহন না গিয়ে সেগুলো ঢাকা থেকে হেমায়েতপুর-মানিকগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়ক হয়ে বেউথা-আন্ধারমানিক সড়কে চলাচল করে ।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বেউথা তিন রাস্তার মোড় থেকে আন্ধারমানিক তিন রাস্তার মোড় পর্যন্ত সড়কের বিভিন্ন স্থানে ইটের সলিং করা হলেও ইট উঠে খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। চলাচল করছে ছোট বড় অসংখ্য যানবাহন। সড়কে প্রচুর ধুলো বালি উড়ছে এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে পথচারীরা।

স্থানীয় আন্ধারমানিক গ্রামের বাসিন্দা চাঁন মিয়া বলেন, সড়কে বড় বড় গর্ত হয়ে গেছে। বাস-ট্রাক পিকআপ চলাচল করলে ঝাঁকিতে ঘর বাড়ি কেপে উঠে। ঝাঁকিতে রাতে ঘুমাতে পারি না। এই সড়ক দিয়ে চলাচলে বৃদ্ধ মানুষ, শিশু, রোগী ও গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

বেউথা এলাকার রফিক মিয়া বলেন, কালীগঙ্গা নদীর তীর থেকে বড় বড় ট্রাকে করে বালু-মাটি পরিবহনের কারণে সড়কের খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এই শুকনো মৌসুমে সড়কে প্রচুর ধুলাবালি থাকে আর বর্ষা মৌসুম এলেই সড়কে হাঁটু পর্যন্ত পানি জমে যায়। এতে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের বেউথা থেকে আন্ধারমানিক পর্যন্ত দুই কিলোমিটার এলাকা বেহাল অবস্থা কারণে ভোগান্তিতে পড়ছেন যাত্রীরা।

মানিকগঞ্জ এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ফয়জুল হক বলেছেন, এই সড়কটি পৌরসভার অধীনে। এটা আমাদের আওতাধীন নয়। কাজেই সড়কটির সংস্কারের দেখভাল দায়িত্ব পৌরসভারই।

এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ পৌরসভার স্থানীয় ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবু নাহিদ বলেন, এই রাস্তার মালিকানা পৌরসভা না হওয়াতে আমরা বিগত সময়ে বড় কোনো প্রকল্প দিতে পারেনি। গত মাসিক মিটিংয়ে আমাদের পরিষদে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমরা জেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসক, এলজিইডি ও সড়ক ও জনপথ (সওজ) বরাবর আপিল করবো যে এই রাস্তার মালিকানা পৌরসভাকে দেওয়ার জন্য। ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের সাথে মৌখিকভাবে কথা হয়েছে লিখিত ভাবে সড়কটি পৌরসভাকে দেওয়া হলে। তখন আমরা একপাশে ড্রেন ও আরসিসি করা হবে। আগামী জুন মাসের মধ্যে এই রাস্তার সংস্কারের একটি সিদ্ধান্ত হবে বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *