ইরি-বোরো চাষে ব্যস্ত মানিকগঞ্জের কৃষকেরা

মোঃ আশরাফুল ইসলাম,মানিকগঞ্জ.

শীতের তীব্রতা কমে যাওয়ার সাথে-সাথেই জমি প্রস্তুত করে ইরি-বোরো ধান চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কৃষকেরা।
রবি সরিষার ফলন শেষ হতে না হতেই উপজেলার বিস্তীর্ন মাঠজুড়ে শুরু হয় ইরি-বোরো চাষ। কৃষকেরা এখন পানি সেচ ও হাল চাষ দিয়ে জমি প্রস্তুত করা শেষে কোমর বেঁধে ইরি-বোরো চাষে মাঠে নেমেছেন। বিদ্যুৎ চালিত ডিপ ও ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন দিয়ে জমিতে পানি সেচ দিয়ে ইঞ্জিনচালিত ট্রাক্টর দ্বারা মাটি আলগা করে কাঁদা মাটিতে মই টেনে জমি প্রস্তুত করে লাগানো হয় ধানের চারা গাছ।সাড়ে তিন থেকে চার মাসে পরিপক্কতা পায় ধান ।
সরেজমিনে সদর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,এবার কাটারি,৭১, ৭৫, ব্রি-২৮,৮১, ৮৯, ১০০ সহ অন্যান্য জাতের ধান রোপন করা হচ্ছে। তবে কয়েক বছর ধরে ধানের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় অনেক কৃষক অন্য ফসলের দিকে ঝুঁকছেন ।তাছাড়া বাজারে ডিজেল তেল ,সার, কীটনাশক ও ঔষধের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় কৃষকদের ধান চাষে বিঘা প্রতি দেড় থেকে দুই হাজার টাকা অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক সামছুল ইসলাম(পঁচু) বলেন,“ আমি দেড় বিঘা জমি আবাদ করেছি । বিঘা প্রতি ৯ হাজার টাকা খরচ হবে ।ধান পাবো ১৫ থেকে ১৬ মন ।সারের দাম বাড়তেই আছে ।সারের দাম যদি সরকার কমিয়ে দিয়ে ন্যায্য মূল্যে ধান কিনে তাহলে আমরা লাভের মুখ দেখতে পারবো ।”
চরমত্ত গ্রামের কৃষক মোঃ জব্বার বলেন,“সারের দাম বেশি,শ্রমিকের মুজুরি বেশি, তাছাড়াও ডিজেলের দাম বেশি হওয়ায় জমি চাষ করতে টাকাও বেশি দিতে হয় । সরকারের কাছে আমার দাবি আমরা যেন ধান ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করতে পারি ।যাতে আমাদের উৎপাদন খরচ থেকে কিছু লাভ হয় ।”
ইরি-বোরোর আবাদ ও উৎপাদন বাড়াতে সরকারী ভাবে দেয়া হচ্ছে ধান বীজ,সার ও কিটনাশক ।
কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ড সদস্য মোঃ শাহিনুর রহমান বলেন,“ প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ‘এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবেনা’ বাস্তবায়নে আমার ওয়ার্ডে দুই দফায় ২৪ জন কৃষককে সরকারী প্রণোদনা স্বরুপ ধান বীজ ও সার দিয়েছি ।এছাড়াও অন্যান্য কৃষকদের ধান চাষে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি ।”
কৃষকরা বলছেন শেষ পর্যন্ত প্রাকৃতিক আবহাওয়া এবং বিদ্যুৎ সরবরাহ ঠিক থাকলে সুষ্ঠুভাবে শতভাগ ফসল ঘরে তুলতে পারবেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্ মাত্রা অর্জিত হবে এবং উৎপাদিত ধান-চালের ন্যায্য মূল্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে সরকারের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *