সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৭ মাসের বেতন ও বিদ্যুৎ বিল বাকি, সংযোগ বিচ্ছিন্ন-মামলা দায়ের

মোঃজাকির হোসেন , নীলফামারী প্রতিনিধি:

বিশ্বের প্রথম গোদ ও থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা কেন্দ্র সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া এন্ড জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ল্যাবের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৭ মাসের বেতন এবং বিদ্যুৎ বিল বকেয়া হওয়ায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন করণসহ পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারী) সন্ধায় নর্দার্ন ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো) রংপুর বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ অভিযান চালিয়ে এই পদক্ষেপ নিয়েছে। এর ফলে হাসপাতালের সার্বিক কার্যক্রম চরমভাবে বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। জরুরী ক্ষেত্রে জেনারেটর চালিয়ে সেবাকর্ম সম্পন্ন করা হচ্ছে।

জানা যায়, দীর্ঘ দিন থেকে হাসপাতালের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেনি বর্তমান পরিচালনা পরিষদ । ফলে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা বকেয়া পড়েছে। নেসকো সৈয়দপুর শাখা কর্তৃপক্ষ বার বার তাগাদা দিলেও ভ্রুক্ষেপ না করায় বাধ্য হয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় বিদ্যুতের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করাসহ হাসপাতালের পরিচালক ডা. রাকিবুল ইসলাম তুহিনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন নেসকো রংপুর বিভাগীয় আভিযানিক দল।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে হাসপাতালে গেলে জানা যায়, শুধু বিদ্যুৎ বিলই নয় দীর্ঘ ৭ মাস যাবত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতনও বাকি রাখা হয়েছে। ফলে চরম মানবেতর জীবন যাপন করছেন এখানে কর্মরত চিকিৎসা সেবায় নিয়োজিত স্টাফরা। ৫২ জন স্টাফের প্রায় সবাই কমপক্ষে ৩ মাস থেকে কোনরকম দিন কাটাচ্ছে। এর মধ্যে উপ সহকারী মেডিকেল অফিসার মইনুল ইসলাম ৪ মাসের এবং অফিস সহকারী মোঃ বদরুজ্জামান ৩ মাসের বেতন পায়নি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী একজন নিম্নপদের কর্মচারী বলেন, হাসপাতালে প্রায় ৫২ জন স্টাফ। প্রত্যেকের নিয়োগ প্রদানকালে পরিচালনা কমিটি ন্যুনতম ৫০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ডোনেশন নিয়েছে। আয়া মায়া বেগম বলেন, কথা ছিল নিয়মিত বেতন দেয়া হবে। সেইসাথে ইনটেনসিভও দিবে। অথচ এখন চরম দূরাবস্থায় পড়েছি। বোনাস দূরে থাক নিয়মিত বেতনও পাচ্ছিনা।

পরিচালক রাকিবুল ইসলাম তুহিন বলেন, কেন বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে তা বিদ্যুৎ বিভাগ বলবেন। বেতন না দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং এই বিষয়ে আর কোন মন্তব্য করতে চায়নি।

কো অডিনেটর ফয়েজ আহমেদ বলেন, আমি ৮ মাস আগেই হাসপাতালের দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করে বেরিয়ে এসেছে। তবে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল ইতোপূর্বের পরিচালনা কমিটির সময়ের। তবুও আমরা ইতোপূর্বে ওই বকেয়ার প্রায় ১ লাখ টাকা পরিশোধ করেছি। গত ৭ মাসে কি হয়েছে তা জানিনা।

পরিচালনা কমিটির সভাপতি জিকো আহমেদ বলেন ১ লক্ষ টাকা বকেয়া বিদ্যুৎ বিল জমা দেওয়া হয়েছে এবং সময় নেওয়া হয়েছে। তিনিও কর্মকর্তা কর্মচারীদের বেতন বাকি থাকা বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।

এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় রোগীরা এসে সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছে। ফলে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে রেগী ও স্বজনদের। সেই সাথে দায়িত্বরতরাও পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায়।

One thought on “সৈয়দপুর ফাইলেরিয়া হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ৭ মাসের বেতন ও বিদ্যুৎ বিল বাকি, সংযোগ বিচ্ছিন্ন-মামলা দায়ের

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *