বিপ্লব সাহা খুলনা ব্যূরো চীফ :
খুলনা নগরীর ছোট ছোট ফুটপাতের টং দোকানগুলোতে অল্প কিছু ক্রেতা লক্ষ্য করা গেলেও
ক্রেতা শূন্য নগরীর বিলাসবহুল শপিংমল ও মার্কেট।
আর এই অভিজাত মার্কেট শপিংমলের দোকান মালিকদের অভিযোগ প্রায় কোটি টাকা ইনভেস্ট করে বসে আছি বেচা বিক্রি নাই দৈনিক ২০ হাজার টাকা।
আজ ১৫ রমজান সরকারি ছুটির দিনে মার্কেটে সেই চিরচেনা উপচে পড়া ভিড় নাই।
নাই দোকানদারদের ব্যস্ততা অলস সময় পার করছে শুয়ে বসে গল্পগুজব করে বিক্রেতারা ।
শবেএ বরাতের পর পর কিছু ক্রেতা মার্কেটে দেখা গেলেও রমজান শুরুর সাথে সাথে বেচা বিক্রি একদম শূন্যের কোঠায় নেমে আসার কারণে আমরা খুব হতাশার মধ্যে পড়েছি।
গেল দুই তিন বছর বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে ব্যবসায়িকভাবে বড় আকারে হুচুট খেয়ে পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিলাম।
সেই অনুপাতে আমাদের ধারণা ছিল এবার যথেষ্ট পরিমাণে ভালো বেচাকেনা হবে।
আর সেই দিকটা বিবেচনা করে আমরা প্রতিটা দোকানে বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে রমজান শুরুর আগে থেকেই পর্যাপ্ত পরিমাণে দেশি-বিদেশি সব ধরনেরই আকর্ষণীয় মাল মজুদ করেছি অথচ আজ ১৫ রমজান যেতে চলেছে। এখন বেলা তিনটা এ পর্যন্ত ১৫ হাজার টাকাও সেল করতে পারিনি বলে জানিয়েছেন খুলনা কেডিএ নিউমার্কেট ফ্যাশন মেলার মালিক পলাশ ব্যাপারী।
এদিকে খুলনা নগরীর অন্যতম থান কাপড়ের মার্কেট আক্তার চেম্বার মালেক চেম্বার ও বড়বাজার এলাকার বিভিন্ন দোকান ঘুরে দেখা গেছে সেখানে একেবারে ক্রেতা শূন্য শুনশান নিরবতা।
এ চিত্র দেখে মনেই হচ্ছে না এখন রমজান মাসের ১৫ দিন।
পাশাপাশি দর্জির দোকানগুলোতে নেই কোনো অর্ডারের চাপ।
যা ও দুই একটি অর্ডার আছে তাও সামান্য পাঞ্জাবিতে সীমাবদ্ধ অর্ডার নেই প্যান্ট শার্ট কোট কমপ্লিট শুটের।
এক্ষেত্রে লক্ষ্য করা গেছে মহিলাদের পোশাক তৈরীর কিছুটা ব্যস্ততা।
তবে এবার মার্কেট শপিংমল গুলোতে উচ্চবিত্ত শ্রেণির হাতে গোনা কিছু ক্রেতা দেখা গেলেও নিম্ন মধ্যবিত্ত খরিদ্দারদের আনাগোনা খুবই কম ।
তবে যে সকল ক্রেতাদের মার্কেট শপিংমল গুলোতে দেখা গেছে তারা অধিকাংশই অভিযোগ করে বলছে এবার পোশাকের দাম আকাশছোঁয়া। যার কারণে বাচ্চাদের রুচিসম্মত পোশাক কিনতে পারছি না ।
এদিকে নগরীর নিক্সন মার্কেট রেলওয়ে মার্কেটে মশিউর রহমান মার্কেট খাজা খানজাহান আলী হকার্স মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে অন্য চিত্র। এখানে দৈনন্দিন খেটে খাওয়া নিম্ন শ্রেণীর কিছুক্রেতা লক্ষ্য করা গেলেও তারা বিভিন্ন দোকানে ঘুরে দাম শুনে ফিরে আসছে খালি হাতে আর সে সকল ক্রেতারা বলছে আমাদের আয় রোজগার সীমিত তা সত্বেও ঈদ পর্ব আসলে ছোট বাচ্চাদেরকে সাধ্যের মধ্য কিছু কাপড়চোপড় কিনে দেওয়া লাগে সেজন্য মার্কেটে এসেছি।
কিন্তু যে পোশাক গত বছর কিনেছি ৬০০ টাকা সেই পোশাক
এ বছর ১২ থেকে ১৩শ টাকা হওয়ায় আমরা নিরাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছি ফুটপাতের দোকানগুলোতে অন্তত ছোট বাচ্চাদের সান্তনা দেওয়ার জন্য হলেও তো কিছু কেনাকাটা করা লাগবে তাছাড়া বাড়িতে বৃদ্ধা বাবা-মা রয়েছে আমরা নিজেদের জন্য কিছু না কিনলেও তাদের তো অন্তত কিছু দেওয়া লাগে।
তারপরে খেয়ে বেঁচে থাকার দ্রব্যমূল্যর যে পরিমাণের দাম বেড়েছে তাতে করে খাবো না পোশাকাদি কিনব। সারা বছর যেমন তেমন মুসলমানদের রমজান মাস আসলে খরচ দ্বিগুণেও কুলানো যায় না।
এখন বর্তমান আয় উপার্জন পরিস্থিতির উপরে আমাদের মতন মানুষদের জীবনে ঈদ উৎসব পর্ব আসা মানেই মরার উপরে খড়ার ঘা।
পাশাপাশি খুলনা আক্তার চেম্বার মার্কেট ব্যবসায়ী মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ শামসের আলী মিন্টু বলেন আমার মার্কেটের প্রতিটা দোকানে দোকান মালিকরা প্রায় কোটি কোটি টাকা ইনভেস্ট করে মাল মজুদ করেছে কিন্তু সেই তুলনায় বেচাকেনা নেই তাদের।
অথচ খুলনা শহরে সবচেয়ে নামকরা টেইলারিং সহ পুরুষদের কাপড়ের দোকানগুলো রয়েছে আমার এই আক্তার চেম্বারে ।
এখানে শহরের উচ্চবিত্ত থেকে নিম্ন শ্রেণীর সকল ধরনের ক্রেতারা পোশাক তৈরী ও কাপড় কেনা কাটার জন্য ভিড় জমাতে দেখাগেলেও
এ বছর সম্পূর্ণতার ভিন্ন চিত্র টেইলারিং দোকানগুলোতে কোন অর্ডারের চাপ নাই বেচাকেনার ক্ষেত্রে শুন্যের কোঠায় প্রত্যেকটা ব্যবসায়ী পূজি হারানোর চিন্তায় মাথায় হাত দোকানে বেচা কেনা হোক আর না হোক খরচের দিক থেমে থাকবে না প্রতিটা দোকানে চার-পাঁচজন করে কর্মচারী রয়েছে তাদের বেতন ভোনাসসহ নিজের পরিবারের খরচ সবকিছু মিলিয়ে আমরা এখন দিশেহারা।
এদিকে ব্যবসায়ীরা বলেছে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মঙ্গার প্রভাব সারা বিশ্বজুড়ে পড়লেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশ গুলিতে অধিকতর হওয়ার কারনে বাংলাদেশে এর সকল ব্যাবসার ওপর মন্দাভাব পরেছে।